বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় রাজধানী ঢাকার কাছে সাভারের ধামরাইয়ে বিখ্যাত যশোমাধবের রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে প্রায় চারশ বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি মেলা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
তবে পুলিশ বলছে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থেকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ বলছেন এটি রথযাত্রা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র এবং এর প্রতিবাদে আজ বিকেলেই মিছিল সমাবেশ করেছেন তারা।
কাল সোমবার ওই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকার উপকণ্ঠে ধামরাইয়ে যশোমাধবের রথযাত্রা নামে বিখ্যাত এ রথযাত্রায় প্রতি বছরই হিন্দু সম্প্রদায়ের অসংখ্য মানুষ অংশ নিয়ে থাকেন।
উৎসবের অংশ হিসেবেই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘকাল ধরে সেখানে মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার সেটি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
ঢাকার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান বলছেন হামলার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই তবে আশঙ্কা থেকেই নিরাপত্তামূলক কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “সব জঙ্গিরা যে ধরা পড়েছে তা তো নয়। যারা বাইরে আছে তারা সুযোগ কাজে লাগাবে তাই স্বাভাবিক। তাদের টার্গেট হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।”
“যেহেতু এখানে বিপুল মানুষের উপস্থিতি হয় সেজন্য গিঞ্জি জায়গাগুলো যেগুলো জঙ্গিরা কাজে লাগাতে পারে সেগুলো আমরা ক্লিয়ার করেছি”-বলছিলেন ঢাকার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান।
কিন্তু পুলিশের এমন কথার সাথে একমত নন মন্দির কর্তৃপক্ষ। বরং মেলা বন্ধ করে আতঙ্ক তৈরির প্রতিবাদে বিকেলে মিছিল সমাবেশ করেছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।
মন্দির কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন বলছেন স্থানীয় একদল রাজনৈতিক নেতা রথযাত্রা বন্ধ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে, নিরাপত্তা অজুহাত তুলে তারাই এলাকাজুড়ে আতঙ্ক তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, “জঙ্গি হামলার নাম করে ঐতিহাসিক রথযাত্রাকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। স্বার্থান্বেষি কিছু রাজনৈতিক লোকজন অতিরিক্ত নিরাপত্তার কথা বলে এটা করেছে”।
স্থানীয়রা বলছেন মন্দির প্রাঙ্গন ও পুরো মেলা এলাকা থেকে শুরু করে আশপাশের এলাকায় এখন চরম ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। মেলায় যারা অংশ নিচ্ছিলো তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী সুকান্ত বনিক বলছেন মেলার দোকান তো বটেই আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
“ঐতিহ্যপুর্ণ মেলা এভাবে বন্ধ করায় আমরা মর্মাহত, অপমানিত ও লজ্জিত। সবার সব হবে আর শুধু আমাদের রথযাত্রা হবেনা। শোলাকিয়ায় আক্রমণ হয়েছে বলে তো শোলাকিয়া বন্ধ হয়নি তাহলে কেন আমার মেলা হবে না”।
কিন্তু স্থানীয় পৌরসভা চেয়ারম্যান গোলাম কবীর পুলিশের ভূমিকাকে সমর্থন করে বলছেন নিরাপত্তার স্বার্থে সবার সাথে আলোচনা করে দুদিনের জন্য মেলা বন্ধ করা হয়েছে।
ওদিকে ধামরাইয়ের পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের আরও কয়েকটি স্থানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা রথযাত্রায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।